Header Ads

হারিয়ে যাওয়া কিছু বাংলা ব্যান্ড।

হারিয়ে যাওয়া কিছু বাংলা ব্যান্ড।


বামবা আয়োজিত বিজয় দিবসের কনসার্ট।

তারুন্যের উচ্ছ্বাস হচ্ছে ব্যান্ড মিউজিক, কনসার্ট এ  প্রিয় ব্যান্ডের সাথে গলা মিলিয়ে শ্রোতারা গান গাবে এটা বর্তমানে সাধারণ চিত্র। মোবাইল নেট দুনিয়াতে ১টি গান ইউটিউবে কোন গান ছাড়ার পর শ্রোতারা তা খুব সহজে লুফে নেয়, অথচ এক সময় শ্রোতারা মাসের পর মাস অপেক্ষা করতো কখন প্রিয় ব্যান্ড নতুন এ্যালবাম বের করছেছে। ৩৫ টাকা ছিল একটা ক্যাসেটের দাম, এই ৩৫ টাকা ঐ সময়ে ছিল অনেক টাকা। আমরা  স্কুলের টিফিনের টাকা বাচিয়ে এই ৩৫ টাকা আমরা সঞ্চয় করতাম তারপর এলাকার ক্যাসেটের দোকান থেকে প্রিয় ব্যান্ডের এ্যালবাম কিনতাম।এলাকার ক্যাসেটের দোকানে শ্রোতারা সব সময় উকি ঝুকি মারতো কোন ব্যান্ডের নতুন এ্যানবাম বের হয়েছে কিনা। ৯০ এর দশক ছিল ব্যান্ড মিউজিক এর স্বর্ণযুগ, সোলস, মাইলস, এলআরবি, ফিডব্যাক, রেঁনেসা,নগর বাউলের মতন ব্যান্ডের পাশাপাশি বেশ কিছু ব্যান্ড এসেছিল, যারা বৈশাখীর ঝড়ের মতন এসে হঠাৎ করে হারিয়ে গেল। ইচ্ছা করলে তারাও হতে পারতো সোলস, মাইলসের মতন প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ড কিন্ত শ্রোতাপ্রিয়তা পাওয়ার পরও তাদেরকে আর মিউজিকে নিয়মিত হতে দেখা যায় নি। হঠ্যাৎ হঠ্যাৎ কোন টিভি প্রোগ্রামে অংশ নিলেও পাবলিক কনসার্টে পুরোই অনুপস্থিত। এখনও ৯০ দশকের শ্রোতারা তাদের নষ্টালজিক হয়ে পড়ে। ইউটিউবে তাদের গান গুলো শুনলে ভাবতেই অবাক লাগে কীভাবে সম্ভব এত সুন্দর আর মেলোডিয়াস গান তৈরি করা। আসলেই ৯০ দশক যারা পাননি তারা বুঝবে না তারা কী মিস করছে।বর্তমান ডিজিটাল যুগে মানুষের বিনোদন যেন হাতের মুধোয়। এক মোবাইলে সব বিনোদন পাওয়া যায়। বলতে গেলে মোবাইল ছাড়া মানুষ এখন অচল, ফেসবুক, ইউটিউব না চালালে মানুষ অস্থির হয়ে পড়ে, ইয়াং জেনারেশনের ছেলে মেয়েরা সবাই মোবাইল নিয়ে ব্যাস্ত। অথচ ৯০ দশকের এসকল কথা চিন্তাতেও ছিল না। দুনিয়া যে এত তাড়াতাড়ি পরিবর্তিত হবে তা ভাবতেই অবাক লাগে, আর এখনতো AI যুগ এসে পড়েছে, সামনে আর কত কী দেখার বাকী আছে কে যানে। শুধু টাইম মেশিন যেন আবিস্কার হওয়া বাকী আছে।

থাক টাইম মেশিন আবিস্কারের আগে ৯০ দশকের শ্রোতাপ্রিয় কিছু ব্যান্ড নিয়ে আলোচনা করে ফেলি।


চাইম- 'চাইম' শব্দের অর্থ সুরেলা শব্দ। চাইম ব্যান্ড তাদের নামের সাথে মিল রেখে অসাধারণ কিছু গান উপহার দিয়েছে আমাদেরকে, তুমি আকাশের বুকে, কোন কারনে, চাচীর দুঃখ, সেদিনিও আকাশে ছিল চাঁদ, কাল মাইয়া,ইত্যাদি জনপ্রিয় গান আছে এই ব্যান্ডের ভান্ডারে, প্রিয় ভোকাল খালিদ ভাই হঠ্যাৎ পৃথিবী থেকে বিদায় নেবার পর এই ব্যান্ডের কার্যক্রম এখন অনেকটা স্থবির।১৯৮৫ সালে প্রটিষ্ঠিত  ব্যান্ডটি এখনও সমান জনপ্রিয়, খালিদ ভাইয়ের মেলোডিয়াস গলায় বিরহের গানগুলো যেন আহত প্রেমিকের করুন আর্তনাদ। তাদের এমন কিছুু মোট ৫টি এ্যালবাম আর কিছু মিক্সড এ্যালবামে গান আছে তাদের। সুরেলা কণ্ঠের অধিকারী প্রয়াত খালিদ ভাই প্রিন্স মাহমুদের সাথে ছিল অসাধারণ রসায়ন, প্রিন্স মাহমুদের মিক্সড এ্যালবামে খালিদের প্রায় সকল গান বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। একটা সময় প্রয়াত খালিদ ভাই ব্যান্ডের থেকে একক ও মিক্সড এ্যালবামে বেশী ঝুকে পড়ে। চাইম এর গানগুলো শহরে ও গ্রামীণ শ্রোতারা খুব সহজে গ্রহণ করেন, যা অন্য ব্যান্ডের বেলায় সম্ভব ছিল না। তাদের 'কাল মাইয়া দুঃখ' গানটিতে কাল মেয়ের গুণ ও দুঃখের কথা বলা হয়েছে। 'চাচীর দুঃখ' গানে গ্রাম বাংলার নারীদের পারিবারিক বিভিন্ন ঘটনা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেগ। খালিদ ভাই গত বছর  ভক্ত শ্রোতাদের কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করার পর ব্যান্ডের কার্যক্রম বেশ নিস্ক্রিয়। প্রয়াত খালিদ ভাইয়ের বিকল্প কেউ হতে পারবে না। তাই হারিয়ে যাওয়া ব্যান্ডের মধ্যে খারাপ লাগলেও আমাদের সকলের প্রিয় এই ব্যান্ডটির নাম চলে এলো।


চাইমের সেই বিখ্যাত প্রথম লাইন আপ।

প্রমিথিউস : এই লিস্টে প্রমিথিউসকে নিয়ে কিছু লিখতে হবে ভাবতেই অবাক লাগে, তুমুল জনপ্রিয়তা থাকতে এই ব্যান্ডের মূল ভোকাল বিপ্লব হঠ্যাৎ মার্কিন মুলুকে পাড়ি জমান। তার হঠ্যাৎ এই প্রবাসে পাড়ি দেওয়াতে ব্যান্ডের কার্যক্রমেও ভাটা পড়ে। বর্তমানে টিভি ও কনসার্টে এই ব্যান্ডের কোন উপস্থিতি নেই। মোট ১৮ টি এ্যালবাম বেরিয়েছে তাদের। একবার মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছে। তাদের জনপ্রিয় গানের লিষ্ট লিখলে শেষ হবে না। মূলত একক ভোকাল নির্ভর ব্যান্ড হওয়াতে প্রমিথিউসকেও হতে হল হারিয়ে যাওয়া ব্যান্ডের লিষ্টে।

প্রমিথিউস ব‍্যান্ডের ভোকাল বিপ্লব।

প্রমিথিউস ব্যান্ডের সদস্যারা

উইনিং: ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যান্ডের মোট এ্যালবাম মাত্র ৩টি। ব‍্যান্ডের মূল ভোকাল চন্দন সহ অন্যান্য সদস্যরা বর্তমানে কানাডাতে অবস্থান করতেছেন। বলতে গেলে তারা এখন প্রবাসী ব্যান্ড, অনেক সম্ভবনাময় এই ব্যান্ডটি থেকে শ্রোতারা আরো অনেক গান আশা করেছিল। প্রথম দুটি এলবামের গানগুলো বিপুল শ্রোতাপ্রিয়তা পাওয়ার পর ব্যান্ডের সদস্যরা ব্যান্ড ছেড়ে বিভিন্ন পেশায় নিয়েজিত হয়ে পড়ে। তাদের প্রাইম টাইম ছিল মূলত ৯১ থেকে ৯৪ সাল পর্যন্ত। বিশেষ করে ১৯৯৩ সালে তাদের প্রকাশিত অচেনা শহর এ্যালবামটি সুপার হিট হয়। ঐ সময়ে BTV তে "গীতি বিচিত্রা" নামে একটি গানের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান হত। ঐ অনুষ্ঠানে শেষের গানটি একটি টপ ব্যান্ডের গান পরিবেশন হত। তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় গান "ইচ্ছে করে" গানটি পরিবেশন করে, যা সুপার হিট হয়। জনপ্রিয়তা থাকা অবস্থায় তারা আর কোন এ্যালবাম বের করে নাই। ২০০৩ সালে তাদের শেষ এলব্যাম বের হয়। তারা সবাই এখন কানাডাতে স্থায়ী হয়েছে।


উইনিংয়ের 'অচেনা শহর' এ্যালবামের কভার।

উইনিংয়ের প্রথম এ্যালবামের কভার ফটো।


পেপাররাইম: একই ধারার মিউজিক শুনতে শুনতে সবাই যখন একটু বিরক্ত হঠ্যাৎ একদল তরুণ ভিন্ন ধারার মিউজিক নিয়ে উপস্থিত হল। তাদের প্রকাশিত এ্যালবাম মাত্র ১টি, কিন্তু তাদের মে গান গুলো ঐ এ্যালবামে গেয়েছে প্রতিটি গান নিযে আলাদা করে কিছু লিখতে ইচ্ছে করে, তাদের "অন্ধকার ঘরে" গানটি এখনও অনেক ব্যান্ড কভার গান হিসাবে বিভিন্ন কনসার্টে গায়।এই গানটিতে রয়েছে একজন আহত প্রেমিকের করুণ আর্তনাদ। আহত পাখির বেদনার্ত কলরব যেন ফুটে উঠেছে এই গানে। "বলতো আকাশে কী রং" গানটি যে শুনবে সেই ভাল বলতে পারবে গানটির ভিতর কী রহস্য লুকিয়ে আছে।"সময়ের হাতে হাত রেখে" গানটির ভিতর এক বিদ্রোহী প্রেমিকের বিদ্রোহী পংক্তিমালা। এই এ্যালবাম বের করার পর তাদের কার্যক্রম অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। মাত্র একটি এ্যালবামের প্রকাশের    ভিতর তারা তুমুল জনপ্রিয়তা পায় তারা, তাদের এ্যালবামের প্রচ্ছদও দেখার মতন ছিল। প্রচ্ছদও যে এত সুন্দর হতে পারে তা তাদের প্রচ্ছদ না দেখলে বুঝা যাবে না। অসম্ভব সুন্দর গ্রাফিক্সের কাজ ছিল তাদের প্রচ্ছদে। তাদের মূল ভোকাল আহমেদ সাদ গত বছর সবাইকে কাদিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। 

পেপাররাইমের লাইন আপ।



প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান Soundtek এর ব্যানারে পেপার রাইমের অসধারণ কভার ফটো।


অরবিট: "ঐ লাল শাড়ি রে নিশি রাতে যায় কোন বনে" এই গানটা এই গানটি ৯০ দশকের তরুনদের মুখে মুখে এই গানটি শোনা যেত। মূলত খুলনার ব্যান্ড অরবিটের রয়েছে অসংখ্য জনপ্রিয় গান। "সুখেরই প্লাবনে", "এই তো সেদিন", "মন কিযে চায়", ইত্যাদি জনপ্রিয় গান আছে তাদের ভান্ডারে। শিল্পী পলাশ ও আলী আহমদ বাবু ছিলেন এই ব্যান্ডের মূল ভোকাল। পরবরতীতে পলাশ সলো নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। মাঝে মধ্যে টিভিতে শো করতে দেখা যায়। তাদের এ্যালবাম বের হয়েছে সবমোট ২টি,২টিই হিট।

অরবিট ব্যান্ডের প্রথম এ্যালবাম।

ডিজিটাল- সূচনা, কেমন আছো? কোথায় আছো জানিনা এই গানটির মাধ্যমে প্রেমিকের মন তার হারানো প্রেমিকাকে খুজে বেড়ায়। এত সুন্দর ও সহজ লিরিক হয়তো অন্য কোন গানে নেই। এই গানটির মাধ্যমে লাইম লাইটে আসে ডিজিটাল ব্যান্ড, এই ব্যান্ডের মূল ভোকাল কামাল আহমদ, চির তরুণ এই ভোকাল মাঝে মধ্যে টিভিতে লাইভ প্রোগাম করেন।"এই মেঘে এই বৃষ্টি"," ডাকপিয়ন", ইত্যাদি তাদের জনপ্রিয় গান। স্যাড রোমান্টিক ধাচের গান গাওয়ার জন্য এই ব্যান্ড খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করে, ইচ্ছে করলে তারা আরও কিছু সুন্দর গান উপহার দিত পারতো।

তীর্থক: কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ'র বিখ্যাত কবিতা "ভাল আছি ভাল থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি দিও" গানটিকে  ব্যান্ডের গানে রুপান্তর করে তীর্থক,অসাধারণ এই গানের গায়ক হলেন তীর্থকের ভোকালিষ্ট আইকো। তাদের ২য় এ্যালবাম 'দুয়ারীতে' গানটি পরিবেশিত হয়। উলেলখ্য যে ১৯৯২ সালে প্রকাশিত এ্যালবামটি সে বছর সর্বাধিক বিক্রিত এ্যালবামের একটি। তাদের সর্বশেষ এ্যালবাম প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ সালে। মূল ভোকাল আইকো কানাভাতে স্থায়ী হওয়ার পর ব্যান্ডের কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়ে তাদের আরও জনপ্রিয় গানগুলো হল "পরাজিত প্রেম", "তুমি বাসকীনা", "দূয়ারী" ইত্যাদি।

তীর্থকের ব্যান্ড মেম্বাররা

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সংগীতার ব্যানারে তাদের প্রথম এ্যালবাম।


ইভস : 'বন্যেরা বনে রয় তুমি এ বুকে তুমি সুখি হবে আমার সুখে, ৯০ দশকের অন্যতম জনপ্রিয় গান, ইভস ব্যান্ডের 'ভাংচুর প্রেম ' এ্যালবমেটি সুপার হিট হয়, এই ব্যান্ডের মূল ভোকাল নাসির। তাদের আরও জনপ্রিয় গান ছিল "কান পেত শুন","ভাংচুর প্রেম", "লেখা পড়া",ইত্যাদি। অনেক সম্ভবনীয় এই ব্যান্ডটি এক সময় অনেকটা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে, ভোকাল নাসির নিউ ইভস নামে নতুন ব্যান্ড গড়েন। তিনি বেশ কয়েকটি সলো এ্যালবাম বের করেন।ইউটিউবে তাদের কিছু জনপ্রিয় গান লোড করা আছে। ইচ্ছে করলে শুনতে পারেন।


ইভ্সের 'ভাংচুর প্রেম' এ্যালবামের কভার ফটো।

মনিটর: মনিটর ব্যান্ড এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালে, তাদের ১ম এ্যালবাম বের হয় ১৯৯১ সালে সেলফ টাইটেল এ্যালবাম, তাদের প্রত্যেকটি গান শ্রোতামহলে প্রশংসিত হয়, মেলোডি ধাচের গানগুলো সবার মন জয় করলেও তারা এক সময়ে হারিয়ে যাওয়া ব্যান্ডের খাতায় নাম লিখিয়ে ফেলে। মাঝে মধ্যে টিভিতে লাইভ প্রোগাম করে। তাদের ভোকাল শামীম ভাইয়ের কন্ঠ অনেক মেলোডিয়াস, ইচ্ছে করলে তারা দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ড হতে পারতো। এই  সময়ের শ্রোতাদের বলবো ইউটিউব থেকে তাদের গানগুলো শুনতে।

কোকাকোলা আয়োজিত মিউজিক কপোজিশনে তয় মনিটর ব্যান্ড।

Sanday : Sunday ব্যান্ডের মূল ভোকাল ছিলেন সবার পরিচিত রবি চৌধুরী, 'কথা ছিল' তাদের একমাত্র এ্যালবাম ছিল, অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ ছিলেন ব্যান্ডটির ম্যানেজার। কথা ছিল গানটি হিট হয়, প্রথম এ্যালবামের পর ব্যান্ডটি ভেঙ্গে যায়।

ওয়েভস: সময়ের আগে জন্ম নেওয়া ব্যান্ড ছিল ওয়েভস, হার্ড রক ব্যান্ড ছিল ওয়েভস, ব্যান্ডের প্রতিটি সদস্য ছিলেন স্মার্ট। স্মার্ট এই ব্যান্ডটি সময়ের আগে যেন অসময়ের গান গাওয়া শুরু করে। তাদের হার্ড রক গানগুলো শ্রোতারা সেভাবে লুফে নেয় নি। খুব বেশীদিন তাদের কার্যক্রম চালু ছিল না।

ওয়েভস ব্যান্ডের সদস্যরা।


সিম্পনি: মনি জামানের ব্যান্ড সিম্পনি, "ভাল আছ ভাল থেক" গানটি তারাও গায়। অনেকের কাছে সিম্পনি গাওয়া গানটি বেশী সমাদৃত হয়। তাদের পালকি এ্যালবাম বেশ জনপ্রিয়তা পায়, মাঝে মধ্যে টিভি শো করা ছাড়া তাদের কোন কার্যক্রম বর্তমানে নেই।

নর্দান স্টার : উক্তরবঙ্গের বাংলাদেশী ব্যান্ড দল নর্দান স্টার। এই ব্যান্ডটি "কে ঐ যায়", "ফটো সুন্দরী" এবং "দুঃসময়", দেলেবেলা, সহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছে। নর্দান স্টার ব্যান্ড  বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতে একটি উল্লেখযোগ্য নাম। নব্বইয়ের দশকে যাত্রা শুরু করা এই ব্যান্ডটি, তাদের গান দিয়ে শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। ব্যান্ডটি "কে ঐ যায়", "ফটো সুন্দরী" এবং "দুঃসময়" অ্যালবামের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করে। মাহমুদ জুয়েল ব্যান্ডের মূল ভোকাল।

SoundTek এর ব্যানারে দু:সময় এ্যালবামের কভার ফটো।
               

উচ্চারণ: আজম খানের ব্যান্ড হচ্ছে উচ্চারণ, আজম খান আর আমাদের মাঝে নেই তাই তার গড়া ব্যান্ডটির কার্যক্রমও থেমে যায়। ১৯৭২ সালে আজম খানের হাতে গড়া ব্যান্ড উচ্চারন, আজম খান অবশ্য উচ্চারণের ব্যানারে কোন এ্যালবাম বের করেন নি। উনি শুধু সলো ও মিক্সড এ্যালবাম নিয়ে কাজ করেছেন।

বাংলাঃ ব্যান্ডের নাম বাংলা, সুতরাং তাদের গানে যে লোক বাংলার লোক বাংলা গানের প্রভাব থাকবে তা সহজে বুঝা যায়। মূলত বাউল গানকে ব্যান্ডের মিউজিকে বাজিয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাদের একাশিত এ্যালবাম হল 'কিংকর্ত৷ব্যবিমূঢ় 'ও 'প্রত্যুতপন্নমতিত্ব'। মূল ভোকালে ছিলেন সবার পরিচিত মুখ আনুশেহ্‌ আনাদিল ও অর্ণব ছিলেন এই ব্যান্ডের মূল ভোকাল।


বাংলা ব্যান্ডের ১ম এ্যালবামের কভার ফটো।

সাডেন! : সাডেন শব্দের অর্থ হঠ্যাৎ, হঠ্যাৎ করে এসে আবার হঠাৎ করেই তারা চলে গেল, কণ্ঠশিল্পী আগুন এই ব্যান্ডে ছিলেন, মোট ৪টি এ্যালবাম তারা বের করেছিল। ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালে ঢাকাতে কোকাকোলা আয়োজিত ব্যান্ড মিউজিক প্রতিযোগীতায় তারা পরপর ২ বার ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করে।

সাডেন ব্যান্ডের সদস্যরা।


অনেক তো ছেলেদের ব্যান্ডের কথা বললাম এবার মেয়েদের ব্যান্ড নিয়ে কথা বলি।

ব্লু বার্ডস: বাংলাদেশের প্রথম মহিলা ব্যান্ড দলের নাম ব্লু বার্ডস,বাংলাদেশের ব্যান্ড ইতিহাসে প্রথম ব্যান্ড যেখানে সব সদস্যই ছিলেন নারী, চট্টগ্রামের লালখান বাজার  নামক এলাকা থেকে উত্থান হয়েছিলো দেশের প্রথম নারী ব্যান্ড দল। এই ব্যান্ডটির জন্ম ১৯৯০ সালের ১১ই নভেম্বর। ভোকাল থেকে ড্রামার পর্যন্ত প্রতিটি পারফর্মারই নারী।এই ব্যান্ডের  একমাত্র এলবামটি বের হয় ১৯৯৫ সালে।এলবামটির নাম “সৈকতে একদিন”। ১৪ টি ট্র্যাক নিয় এই এলবামটি তারা প্রকাশ করেন। এই ব্যান্ডটির গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জ্যাকব ডায়েস। জ্যাকব ডায়েস চট্টগ্রামের ব্যান্ডের একজন শিক্ষা গুরু বলা চলে। অনেক বিখ্যাত শিল্পী যেমন আইয়ুব বাচ্চু তার হাত ধরেই ব্যান্ড সংগীতের জগতে এসেছেন। তিনি "স্পাইডার" এবং "ব্লু বার্ডস" ছাড়াও চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি ব্যান্ড গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ব্লু বার্ডস ব্যান্ডের এ্যালবামের কভার ফটো।

জেমিং: জেমিং নামের একটি ব্যান্ড বিটিভিতে ব্যান্ড শোতে নিয়মিত গান পরিবেশন করতো, সম্ভাবনাময় এই ব্যান্ডটি সম্পর্কে বেশী কিছু জানা যায় নি।


এছাড়াও আরও অনেক ব্যান্ড এসেছে যারা স্বল্প সমযের উপস্থিতিতে ভাল কিছু গান উপহার দিলেও একটা সময় তারাও হারিয়ে যায়। চট্টগ্রামের কিছু ব্যান্ড যেমন রুট্‌স,স্পাইডার, নভেম্বর ইলেভেন, সফট টাচ, স্টিলার,স্পার্ক ইত্যাদি ব্যান্ড ঐ সময়ে বেশ সক্রিয় ছিল, বিভিন্ন কনসার্টে তাদের সরব উপস্থিতি ছিল, বর্তমানে তাদের উপস্থিতি চোঁখে পড়ে না,

আরো অনেক ব্যান্ড আছে যারা নিয়মিত নাই। যেমন নোভা, রেনেঁসা, বছরে ২/১ টি কনসার্ট করা ছাড়া তাদের কার্যক্রম এখন তেমন একটা নেই। অবসকিউরকে টিভি প্রোগামে বেশী দেখা যায়। ।আর  আমাদের সবার প্রিয় LRB কেউ এই কাতারে ফেলতে পারি, বস আইযুব বাচ্চুর মৃত্যর পর LRB ও ভেঙ্গে গেল। আসলে ব্যান্ড গুলো একক ভোকাল নির্ভর হলে কোন কারনে ভোকালের কিছু হলে সেই ব্যান্ডও In active হয়ে যায়।

Band হল একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা, কিন্তু Band এর একটি গান হিট হলে এর ফোকাস পরে ব্যান্ডের ভোকাল এর উপরে, ব্যাক্তিগত ইগো, পেশাদারীত্বের অভাব, ইত্যাদি কারনে একটি ব্যান্ড লাইম লাইটে আসলেও পরে টিকে থাকতে পারে না, ভোকাল নির্ভর একক ব্যান্ড হলে আরো সমস্যা, ভোকাল ব্যান্ড ত্যাগ বা মৃত্যবরণ করলে সেই ব্যান্ড আর এগোতে পারে না,LRB, Chime,হচ্ছে এর প্রকৃত উদাহরন, কিন্তু Souls, Feedback, Miles, Warfaze এর মতন Band একক ডোকাল নির্ভর না হওয়াতে টিকে গেছে, 


আমার এই লেখাতে কিছু ভূল ত্রুটি থাকতে পারে, ব্যাক্তিগত ভাবে কাউকে ছোট বা কোন দলকে ছোট করে লেখা নয়, হয়তো আরও অনেক ব্যান্ডের নাম আছে যা বাদ পরে গেছে, তাই ব্যাক্তিগত ভাবে সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।


লেখক: জুয়েল মাহমুদ।


তথ্যসূত্র :  উইকিপিডিয়া,ছবি: বিভিন্ন ব্যান্ডের ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহিত ।


1 comment:

  1. অনেকদিন পর বাংলা ব্যান্ড নিয়ে কেউ কিছু লিখলো, ফিরে গেলাম ৯০ এর দশকে।

    ReplyDelete

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.