Header Ads

কে হচ্ছে পরবর্তী টার্গেট ?

কে হচ্ছে পরবর্তী টার্গেট ?


ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, ইরানের পর পরবর্তী টার্গেট কে? 

অথবা who is the next? 


ইরানের সাথে চলমান ইসরাইলের সংঘর্ষ কেউ এগিয়ে আবার কেউ একটু পিছিয়ে, প্রাথমিক ধাক্কা সামলিযে ইরান বেশ ভালভাবেই আক্রমনের পাল্টা জবাব দিচ্ছে। বিমান শক্তিতে দূর্বল ইরান বেশ কিছু দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র তৈরি করে রাখাতে এ যাত্রায় কিছুটা বেচে গেলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে যোগদান করে তবে ইরানের পক্ষে আর টিকে থাকা সম্ভব নয়, অসম এই যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের সব আরব রাষ্ট্র সমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসরাইলকে সহযোগীতা করতেছে।জর্ডান, সিরিয়া ও ইরাক সরাসরি তাদের আকাশ সীমা ইসরাইলী বিমান আক্রমনের জন্য খুলে দিয়েছে, আবার ইরানের ক্ষেপনাস্ত্র সমূহ তাদের আকাশ সীমানাতে ধ্বংস করে দিচ্ছে, বলতে গেলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য দেশগুলোর সাথে ইরানকে একা লড়তে হচ্ছে।

বিপদের সময় সবাই সরে যায়।

ইরান প্রাণপণ লড়াই করলেও যুক্তরাষ্ট্র যদি একবার এই যুদ্ধে অংশ নেয় তাহলে ইরানের অবস্থা ইরাকের মতন হতে বেশী দেরি নাই। যদি রাশিয়া ও চীন এই যুদ্ধে ইরানকে সহযোগীতা না করে তবে ইরানের পরিণতি খুব একটা ভাল হবে না। চীন ও রাশিয়া দু পারমানবিক দেশকে যুক্তরাষ্ট্র ভয় পায়। চীন অর্থের থলে নিয়ে বিভিন্ন দেশে ঋণ দিয়ে থাকে পরবর্তীতে সেই দেশকে দেউলিয়া বানিয়ে চলে যায়। আর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে খুব একটা সুবিধা করতে না পারাতে ইরানের এই অসময়ে পাশে দাড়াতে পারতেছে না। ইরান-রাশিয়ার দহরম মহরম সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই আছে। ইউক্রেন যুদ্ধে ইরান রাশিয়াকে বেশ সহযোগীতা করলেও বর্তমানে রাশিয়া রহস্যজনক ভূমিকা পালন করতেছে। কোন ধরনের জোড়ালো নিন্দা বা প্রতিবাদও তাদের মুখে নেই। অথচ রাশিয়ার সাথে ইরানের বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই।যদি রাশিয়া ইরানের পাশে এসে না দাড়ায় তবে ইরানের পক্ষে একা এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলেও ইউক্রেনের পাশে সমগ্র ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র পাশে এসে দাড়ায় যার জন্য ইউক্রেন টিকে গেছে। কিন্ত ইরানের কী হবে, ইরানের পরিনতী কী গাজার মতন হবে। যদি ইরান পরাজিত হয় তবে কে হবে ইসরাইল বা পশ্চিমাদের পরবতী টার্গেট ? ইতিমধ্যে ইসরাইলের এক সাবেক মন্ত্রী পাকিস্তানকে পরবটী টার্গেটের কথা বলেছে। অর্থ্যাৎ next target is Pakistan, পাকিস্তান পারমানবিক শক্তিধর রাষ্ট্র, মূলত এই বোমাটি থাকার কারণে ভারতও পাকিস্তানকে ভয় পায়। এখন পারমানবিক বোমা থাকাটা যেন পাকিস্তানকে হামলার  পরবর্তী টার্গেট এ পরিণত হয়েছে। এই পরমানবিক বোমা কিন্ত ইসরাইলেরও কাছে আছে। কিন্ত তা নিয়ে পশ্চিমাদের কোন আওয়াজ নেই, সব সমস্যা যেন ইরান আর পাকিস্তানকে নিয়ে। পশ্চিমারা আবার একবার যা ধরে তা করে ছাড়ে। যেভাবেই হউক তাদের লক্ষ্য অর্জন করবে। আগে হউক বা পরে হউক তারা লক্ষ্য অর্জন করে ছাড়বে।

আমার আগের লেখায় গ্রেটার ইসরাইলের কথা বলেছিলাম, দেশ দখল এখন আর যুদ্ধ করা লাগে না, আনুগত্যতা প্রকাশ বা চুক্তির মাধ্যমে দেশ দখল হয়ে যায়। আজকের এই চনমান সংকটে ইরানের পাশে কেউ না দাড়িয়ে তাদের নীরবতাই বলে দিচ্ছে তারা ইসরাইল তথা আমেরিকার আনগত্যতা মেনে নিয়েছে। আমেরিকা আবার সব আরব রাষ্ট্র সমূহকে একটা চুক্তি করার জন্য চাপ দিচ্ছে, চুক্তিটির নাম হল আব্রাহাম চুক্তি। ইতিমধ্যে কয়েকটা আরব রাষ্ট্র এই চুক্তিতে সই করেছে।অন্য রাষ্ট্রগুলোও আগে ও পরে এই চুক্তিটি করবে। ইসরাইলকে পরোক্ষভাবে স্বীকৃতি দেওয়াটাই হল এই চুক্তির মূল লক্ষ। এই চুক্তিটির পর Greater Israel হওয়ার পথ অনেকটা সুগম হবে। মানচিত্র পরিবর্তন না করেও আনুগত্যতা মানলেও এক প্রকার তাবেদার রাষ্ট্র হয়ে বেঁচে থাকতে হবে। আমার এই লেখা যখন লিখতেছি তখন গাজাতে হয়তো ৯০ বা ১০০ জন শহীদ হয়েছে ত্রাণ নিতে গিয়ে। কী দূর্ভাগ্য এক জাতি খাবারের জন্য লাইনে দাড়াতে গিয়ে হত্যার শিকার হতে হয়।

কিছুদিন আগে ট্রাম্প যখন বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অস্ত্র বিক্রির  চুক্তি করে গেলো তখনও কিন্ত এই চলমান গণহত্যা বন্ধ করতে পারতো, কিন্ত গাজা নিয়ে আবরদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। আরেক আরবদেশ তো মেয়েদের চুল খুলে এক অদ্ভূত কায়দায় ট্রাম্পকে সম্বর্ধনা দিয়েছে। ট্রাম্প হয়তো বেশ মজাও পেয়েছে।

এই ভাবে সম্বর্ধনা যদি আমাদের দেশ  দিত তাহলে এই দেশের হুজুররা এতক্ষনে বায়তুল মোকারম মসজিদের সামনে দাড়িয়ে কত চিল্লা চিল্লি করতো। এই সরকার নাস্তিক, মুমিন মুসলমান নয় আরো কত কিছু। ইরান যদি হেরে যায় তখন আবার এক শ্রেনীর হুজুররা হয়তো তখন বলবে এরা শিয়া, এদের আকিদা ভিন্ন, প্রকৃত মুসলমান নয়, আরো কত কী।

যাই হউক পরবতী টার্গেট যেহেতু ইসরাইলের সাবেক মন্ত্রী বলে ফেলেছে, তাই আরবরা এই যাত্রায় বেচে গেছে। পাকিস্তানের তেল নেই। তাই তেল বিক্রি করে অস্ত্র কিনে পশ্চিমাদেরকে খুশি করবে সেই অবস্থাও তাদের নেই। বর্তমানে করুন আর্থিক অবস্থার আর বেলুচিস্তান নিয়ে পাকিস্তান নানামুখি সমস্যায় আছে। তাই অনেকটা গোদের উপড় বিষফোরা হয়ে দাড়িয়েছে ইসরাইলী এই হুমকি। আবার কোন কোন মিডিয়া প্রচার করতেছে next target হচ্ছে নাকি তুরস্ক। তুরস্ক পশ্চিমাদের অনেক পুরনো মিত্র হলেও অটোমান সাম্রাজের সময় থেকে অনেক ইউরোপিয়ান দেশ তাদের পছন্দ  করেনা। তুরস্কের এরদোয়ান  আবার  অনেক চালাক, কোন না কোন উপায় সে বের করবে। দেখা যাক who is the next target।





লেখক: জুয়েল মাহমুদ।

No comments

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.