জার্মান মেশিনের কি হল!
'ফুটবল খেলে দু দল কিন্তু জিতে এক দল, আর সে দলটির নাম জামার্নি'।
জার্মানির ফুটবল নিয়ে এই ধরনের কথা অনেক আগে থেকেই প্রচলিত। কিন্ত ইদানিং মাঠে তাদের পারফরম্যান্সের সাথে সেই কথার সাথে কোনো মিল নাই।পরপর দুই বিশ্বকাপে তারা প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়ে জার্মান মেশিন যে আস্তে আস্তে জং ধরেছে তা প্রমাণ করে দিল। জার্মানি পাওয়ার ফুটবল খেলতে পছন্দ করে। মাঠে তারা প্রতিপক্ষের রক্ষণ শিবিরে ঢুকে বিপক্ষ দলের খেলোয়ারদেকে নাকানি চোবানি খাইয়ে গোল আদায় করে নেয়। অনেকটা যুদ্ধের ময়দানে নেমে প্রতিপক্ষের সমীহ আদায় করে নেয়। তাদের ফুটবলে শৈল্পিক কোন সৌন্দর্য নেই। তাদের খেলোয়াদেরকে অনেকটা মেশিন মেশিন লাগে। আসলাম,খেললাম আর জিতলাম অনেকটা এই রকম।
এতদিন এই যুদ্ধ জয়ী দলটিকে সবাই সমীহ করলেও মেশিনও যে এক সময় আস্তে আস্তে দূর্বল হয়ে পরে জার্মান ফুটবল দল তাই প্রমাণ করলো।
জার্মান ফুটবলের এই ক্ষয়শ রুপ ধারণ করে মূলত গত বিশ্বকাপ থেকে। দলের ভিতর গোরা জাতীয়তাবাদী চিন্তা ভাবনা দলের খেলাতেও অনেক প্রভাব ফেলে। জার্মানি দলের বেশ কিছু খেলোয়ার তুর্কিসহ অন্য দেশের বংশোদ্ভূত।মূলত বহজাতিক এই দলটি অপূর্ব ফুটবলশৈলী দিয়ে তারা জিতলো ২০১৪ এর বিশ্বকাপ। কিন্ত ২০১৮তে এসে উগ্র জাতীয়তাবাদ চেতনা দলটিকে বিভক্ত করে।এতে সবচেয়ে করুণ শিকার মেসতু ওজিল। এই তরুণ তুর্কি ছিল জার্মান দলের প্রাণ ভোমরা। অসাধারন ড্রিবলিং, নির্ভুল পাশিং, সব কিছু মিলে একজন টোটাল ফুটবলার ছিলেন তিনি, কিন্ত নির্মম বর্ণ বৈষম্যের করুণ পরিণতি হন তিনি।যার প্রভাব পড়ে ২০১৮ এর বিশ্বকাপে। ইউরোপের প্রায় সব দেশে অভিবাসী বংশোদ্ভূত ফুটবলার রয়েছে।ফ্রান্সের গত বিশ্বকাপ জয়ী দলটির দিকে তাকালে দেখা যাবে সেখানে অভিবাসী ফুটবলারদের আঠিক্য। ফরাসী এবং অভিবাসীদের সমন্বয়ে এক চমৎকার দল। পল পগবা, এম্বাপে, সবাই আফ্রিকান বংশোদ্ভূত খেলোয়ার।বিশ্বায়নের এই যুগে সবাই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে, কিন্ত তা পারলো না শুধু জার্মানী।
Comments
Post a Comment