সাদা পাথর তুমি কার ?

     আমরা শক্তি আমরা বল 
.    আমরা খাদক দল।
.    খাও খাও খাও।।

     আমরা শক্তি আমরা বল
.    আমরা পাথর খাদক দল।
.    খাও খাও আরও বেশী করে খাও।।


সাদা পাথর এখন শুধুই স্মৃতি।

প্যারোডী গানটা কেমন হয়েছে।

এটা যদি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জাতীয় সংগীত হয় তবে কেমন হবে। এই গানটির মাধ্যমে ই আমরা আমাদের ভবিষৎ দেখতে পারতেছি। একটা বড় খাদকের পেটে যে আমরা ঢুকতে যাচ্ছি তা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই প্যারোডি গান গাওয়ার একমাত্র কারন সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সিলেটে সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনা নিয়ে। সিলেটের সাদা পাথর অনেক মূল্যবান পাথর, সম্প্রতি দেশ প্রেমিক বিভিন্ন রাজনৈতক দলের নেতারা এক হয়ে  লুটপাট করে সমগ্র জায়গাটাই একেবাড়ে ন্যাড়া করে দিয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ চুরি হওয়া নতুন কিছু না তবে তা করে বিদেশী লুটেরারা, তারা কোন দেশ দখল করে সে দেশের সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়, যেমন ইরাক দখল করে ইরাকের তেল চুরি, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে মূল্যবান হীরা, স্বর্ণ, ইত্যাদি পরোক্ষভাবে চুরি করা, কিন্ত বাংলাদেশের কী বিদেশী চোর ঢুকে পড়েছে, না এই দেশের দেশ প্রেমিক  জনতা এমন কাহিনাটি করেছে। যে সাদা পাথরের উপড়ে দারিয়ে পর্যটকেরা ছবি তোলার জন্য সিলেটের ভোলাগঞ্জে ছুটে যেত সেই সাদা পাথের গায়েব হয়ে গেছে, অবাক একটা প্রাকৃতিক সম্পদ কোন খনিজ পদার্থও নয় তাও গায়েব হয়ে গেলো।



পাথর লুট করে ন্যাড়া করে দিয়েছে।

ভারত থেকে নেমে আসা সীমান্ত নদী ধলাই নদীর জিরো পয়েন্ট এলাকা স্থানীয়ভাবে ‘সাদা পাথর’ এলাকা হিসেবে পরিচিত। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এলাকাটি দেখতে প্রতিদিনই পর্যটকরা সেখানে ভিড় করেন। মূলত ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা ধলাই নদীর পানির সঙ্গে প্রতিবছর বর্ষাকালে নেমে আসে প্রচুর পাথর। ধলাই নদীর তলদেশেও রয়েছে পাথরের বিপুল মজুদ।সাদা পাথরও যে চুরি হবে তা কারও কল্পনানেতও ছিল না। সাদা পাথর শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, এটি আমাদের অর্থনীতি, নির্মাণ, শিল্প এবং রফতানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।অনেক সাদা পাথর মূলত চুনাপাথর (limestone), যা সিমেন্টের মূল উপাদান।সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলো চুনাপাথর থেকে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে সিমেন্ট তৈরি করে। সড়ক ও মহাসড়ক নির্মাণে: সাদা পাথর ভেঙে ক্রাশার পাথর তৈরি করা হয়, যা রোডবেস, সাব-বেস ও পিচ ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হয়। তাই এই সাদা পাথরের আলাদা কদর রয়েছে। আর লুটেরারা মহা আনন্দে এই সাদা পাথর লুটে নিল। সাদা পাথরের চাহিদার জন্য প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নদী থেকে পরিমাণমত তা উত্তোলন করা হয়।স্টোন ক্রাশ মেশিনের সাহায্যে ভেঙে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তা সরবরাহ করে, সাদা পাথরকে ঘিরে ঐ অঞ্চলে অনেক 'কোয়ারি' (যেখানে পাথর ভেঙ্গে বেচা কেনা হয় অনেকটা স' মিলের মতন) আছে। পাথর উত্তোলন করে বিক্রি করা একটা নিয়মিত ব্যাপার তবে তা সরকারী অনুমতি সাপেক্ষে। উত্তোলন এক জিনিস আর লুট করা আরেক জিনিস।
পাথরতো খাওয়া শেষ হল, দেশেতো আরো পর্যটন এলাকা আছে, ঐ গুলো কেন বাদ যাবে, 

                      সুন্দরবনের এই রুপ কী থাকবে।


বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন যা লবণাক্ত পরিবেশে জন্মায়। বাংলাদেশের অক্সিজেন সুন্দরবন, সুন্দরবনের কী আছে কী নাই তা নিয়ে নতুন করে লেখার কিছু নাই। সুন্দরবনে আছে প্রচুর সুন্দরী, গেওয়া, হিংগুল, গরান,ইত্যাদি মূল্যবান গাছ, যারা সুন্দরবন গেছেন তাদের উচিত সুন্দরবন নিযে এখনই স্মৃতিচারণ করা, কেননা ভবিষ্যৎ হয়তো এইটাও ন্যাড়া হয়ে যাবে, হয়তো ন্যাডা হচ্ছে যা এখনও জানি না, কিছুদিন পর  হয়তো শুনবো সুন্দরবন কেটে উজাড়। তাই এখনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুন্দরবন ভ্রমণের ছবি আগে ভাগেই পোষ্ট দিয়ে রাখেন, 


বাঘ মামা অপলক নয়নে তাকিয়ে আছে।


ওহ সুন্দরবনের অবলা বাঘ, হরিণ, সাপ, কুমির ইত্যাদির কি অবস্থা হবে। বেচারাদের উচিত এখনই জোট করা যাতে গাছ খেকোদের (পরবর্তীতে পশু খেকো) হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করা।তাদের জোটের নাম হওয়া উচিত সম্মিলিত পশু রক্ষা কমিটি, তা না হলে গাছের পর তাদের প্রতিও খাদকদের নজর থাকবে। আর বন থেকে গাছ কেটে ফেললে বনের  নিস্পাপ (বর্তমানে মানুুষ ছাড়া পশুরাই নিস্পাপ) এমনিতেই লোকালয়ে চলে আসবে খাবারের সন্ধানে আর শিকারীদের সহজ শিকারে পরিণত হবে। এরপরে আসি কক্সবাজারের প্রতি, অনেকেই এখনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট দিচ্ছে কক্সবাজারের বালু লুট হবে তাই এখনই পোষ্ট দেওয়া শুরু করেছে। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ পর্যটন নগরী কক্সবাজার, এই খানেও বালু ও  উন্নত মানের সাদা বালু (সিলিকা) ও লাল মাটি পাওয়া যায। এছাড়া শুটকী, লবনের জন্যে বিখ্যাত, তাই দখলবাজদের পছন্দের জায়গা হতে পারে কক্সবাজার। এক দিকে কক্সবাজারও ঘুুুুড়া হলো অন্যদিকে বালু, মাটি,  ইত্যাদি লুটপাটও করা হল,  অনেকটা রথও দেখা হল কলাও বেচা হল।

কক্সবাজারের বালু।

কক্সবাজার শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের একটি অনন্য প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক ও পর্যটনসম্পদপূর্ণ এলাকা। এই সম্পদগুলোর সঠিকভাবে লুটপাট করলে লুটেরাদের ভাগ্য খুলে যাবে। আজ এই পর্যন্তই। কিছু দিনের ভিতরেই হয়তো আরো এই রকম আরো অনেক লুুটপাটের ঘটনা ঘটবে তখন ঐ গুলো নিয়ে লিখবো।



লেখক: রম্য রহিম।

Comments

Popular posts from this blog

হারিয়ে যাওয়া কিছু বাংলা ব্যান্ড।

সোনার মুকুট আর ছাগল কান্ড!!

১০টি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া যা আপনার দৈনন্দিন জীবনে খুবই উপকারী।